ভর্তুকি উন্নয়নের পরিপন্থী: বাজার মৌলবাদীদের কুসংস্কার

খয়রাতি ও উন্নয়নের বিতর্ক নতুন কিছু নয়। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা এই বিতর্কটাকে নতুন করে উস্কে দিয়েছে। এর একটা হল সুপ্রিম কোর্টে এক জনস্বার্থ মামলা, যেখানে মামলাকারীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে জিততে বিভিন্ন রকম খয়রাতির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যা নির্বাচকদের ঘুষ দেওয়ার সামিল। এর ফলে দেশের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে, তাই এসব নিষিদ্ধ করা উচিত। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, খয়রাতির পিছনে রাজকোষের অর্থ অপচয় না করে রাস্তাঘাট তৈরির মত উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা উচিত। খয়রাতি একটা অবজ্ঞাসূচক শব্দ। তাই এই শব্দের ব্যবহারের মধ্যে দিয়েই শব্দটির ব্যবহারকারীর মতামতও বেরিয়ে আসে। তবে এক্ষেত্রে অনুদান বা ভর্তুকি দুটোকেই বোঝায়। অনুদান নগদে বা দ্রব্যে দুরকমভাবেই হতে পারে। ভর্তুকির ব্যাপারটা অবশ্য একটু জটিল।

বাজার মৌলবাদীদের মতে ক্রেতা যদি সরকারের সহায়তার ফলে বাজার দরের থেকে কম দামে কোনো জিনিস কিনতে পারে তাহলে যে পরিমাণ কম দামে সেটা কিনতে পারছে তাকে ভর্তুকি বলা হবে। তবে ভর্তুকির ব্যাপারটা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা সহ অনেক আন্তর্জাতিক চুক্তিতে আছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাকে বিভিন্নরকমভাবে সংজ্ঞায়িত বা পরিমাপ করা হয়েছে। তা নিয়ে মতভেদও আছে। নব্য উদারবাদ বা বাজার মৌলবাদ অনুসারে ভর্তুকি বা অনুদান খুব খারাপ ব্যাপার। এসবের ফলে বাজারের তথা অর্থব্যবস্থার কার্যদক্ষতা হ্রাস পায়, তাই এগুলো যতদূর সম্ভব পরিত্যাজ্য এবং যদি পরিত্যাগ করা একান্তই অসম্ভব হয়, তাহলে ভর্তুকি ন্যূনতম হওয়াই বাঞ্ছনীয় এবং তার উপরও কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। আজকের দুনিয়ায় প্রায় সমস্ত দেশেই অর্থব্যবস্থা চালিত হয় মূলত নব্য উদারবাদের ভিত্তিতে, তবে কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের পক্ষে পুরোপুরি তা করে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই এসবের উপরে যদি আইনি রাশ টানা থাকে তাহলে রাজনৈতিক নেতাদের সুবিধা হয় বৈকি। তবে এমন আইন আনা সরকারের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তবে জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে হলে সরকারের আর দায় থাকে না।Read More

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *